-->

বিস্ময়ে ভরা মহাকাশ !



সেই  প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ পৃথিবী আর আকাশ নিয়ে ভেবেছে। আর এই ভাবনা থেকে মনে শত প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। কত বড় এই পৃথিবী ? আকাশের চাঁদ-তারাগুলোই আসলে কত বড় ? আবার কেউ হয়ত ভেবেছে,আমাদের থেকে কত দূরে এগুলো? কেউ আবার বড় কোন গাছে উঠে চাঁদটাকেই ধরে ফেলতে চেয়েছে। মানুষ তখনো বনে-জঙ্গলে ঘুরে বেড়াত। সারা দিন খাবারের সন্ধান করার পর, রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে তাদের বিস্ময়ের শেষ ছিল না। আকাশ কেমন, তারাগুলোই বা কি এ নিয়ে তারা ভাবত এবং জানতে চাইত।  
আদিম মানুষরা ভাবতো, পৃথিবীটা বুঝি খুব বেশি বড় নয়। আর আকাশের ওই তারাগুলোও তাদের থেকে খুব বেশি দূরে না। আসলে এত প্রাচীনকালে তাদের ধারণা করা সম্ভব ছিল না যে , কত বড় এই পৃথিবী । আর কত বিশাল এই আকাশের চাঁদ-তারাদের রাজত্ব ! 
হাজার হাজার বছর মানুষ শুধুমাত্র খাদ্যের সন্ধানে দলবেধে এক বন থেকে আরেক বনে ঘুরে বেড়িয়েছে। তখনও তাদের থাকবার কোন নির্দিষ্ট জায়গা ছিল না। সারাদিন খাবার খুঁজে এসে রাতে কোন এক গুহায় ঘুমিয়ে পড়ত। এক সময় মানুষ বুঝতে শিখল যে- কিছু এলাকা আছে, যেখানে স্থায়ীভাবে থাকার জায়গা বানালে মন্দ হয় না। কোন এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করার পর থেকেই মানুষ শুধুমাত্র বন্য ফলমূলের উপর ভরসা করা বাদ দিয়ে দেয়। তারা কৃষিকাজ শুরু করে।
কৃষিকাজ শুরু করার পর থেকেই তাদের আকাশের তারাদের উপর নজর রাখার দরকার পরল। ভাবছ , কৃষিকাজ করলে আবার তারাদের দিকে খেয়াল রাখার কি দরকার ? তখন তো আর বছর আর মাসের কোন হিসেব ছিল না। ছিল না বর্ষাকাল বা শীতকালের কথা। মানুষ তখন আকাশের তারাদের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারত এখন বুঝি বর্ষা নামার সময় হয়েছে। এখন ঝুম বৃষ্টি হবে। আর আমাদের ফসলগুলোও তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠবে।
তারা লক্ষ্য করে দেখল, আকাশের সব তারাগুলো ঠিক এক রকম নয়। ৪ থেকে ৫ টি তারা বাদে অন্য তারাগুলো সবাই একসাথে চলাফেরা করে। সারা বছর ধরে খুব ধীরে ধীরে এক পাশ থেকে অন্য পাশে চলে যায়। এত ধীরে যায় যে- খুব ভালমতো খেয়াল না রাখলে তা বোঝারই উপায় নেই। আর শুধু ওই নির্দিষ্ট ৪-৫ টি তারা একা-একা ও একটু দ্রুত চলাফেরা করে।  প্রাচীন মানুষেরা বুঝতে পারল যে- এই তারাগুলো অন্যসব তারার থেকে আলাদা। চলাফেরা করে বলে এই তারাগুলোর নাম দেওয়া হয়েছিল গ্রহ (চষধহবঃ ) বা চলাফেরা করে এমন তারা। বাংলায় এদের আমরা  গ্রহ বলি। 
 প্রাচীন মানুষরা শুধু এটুকুই জানত যে-  গ্রহগুলো অন্য তারাদের মত না । কিন্তু এরা আসলে কি দিয়ে তৈরি সে সম্পর্কে পুরোটাই ছিল অজানা। তাছাড়া এই  গ্রহগুলো যে আকাশের এক দিক থেকে অন্য দিকে ছুটে চলে, তার অর্থ যে কি, সেটাও তারা জানত না। এখন আমরা জানি, আমরা যে  পৃথিবীতে বাস করি সেটাও আসলে একটি সাধারণ  গ্রহ ছাড়া আর কিছু না। (চলবে)



No comments

Powered by Blogger.